Publish: Wednesday August 4, 2021 | 1:19 am  |  অনলাইন সংস্করণ

 dhepa 

চলতি বছরের জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

মাসের শুরুতে আক্রান্তের সংখ্যা তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ মাসের ৩ দিনেই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৮৮ জন।

গত মাসের ৩১ দিনে এ সংখ্যা ছিল ২২৮৬ জন। এ তথ্য রাজধানীর ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের। তবে এর বাইরে ঠিক কত রোগী ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন এবং চিকিৎসাধীন তার কোনো হিসাব নেই সরকারের কাছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) তথ্যমতে, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকায় বসবাস করেন।

এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আমেরিকা, আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের প্রায় ১০০টি দেশে এ রোগের বিস্তার রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে প্রতি বছর ৫ থেকে ১০ কোটি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হন।

যার মধ্যে ৫ লাখ মানুষ হেমোরেজিক জ্বরে ভোগেন আর কমপক্ষে ২২ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। যাদের মধ্যে একটি বড় অংশই শিশু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৪৪৬ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে রোগী শনাক্ত হয় ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মে-তে ৪৩ জন, জুনে ২৭১ জন, জুলাইয়ে ২২৮৬ জন এবং আগস্টে ৩ দিনে ৭৮৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০৭২ জন।

এরমধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০২৫ জন। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসাধীন আরও ৪৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪৮ জন। এই সময়ে ঢাকার বাইরে ১৬ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ তথ্যে ৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। যাদের তথ্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে মৃত্যুগুলো ডেঙ্গিজনিত কিনা সেটি এখনও নিশ্চিত করেনি আইইডিসিআর।

বাংলাদেশে ডেঙ্গি পরিস্থিত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ রোগের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে কম ছিল। ওই ৮ বছরে কখনোই ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়ায়নি।

২০১৫ সাল থেকে রোগটির প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ২০১৭ সালে কিছুটা কমে ২০১৮ সালে আবার বেড়ে যায়। সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক জরিপে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ডেঙ্গিজ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ছিলেন শিশু, শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুযায়ী ২০১৯ সালে আইইডিসিআর থেকে ডেঙ্গি সন্দেহে ২৭৬ জনের মৃত্যুর তথ্য আসে। বিশেষজ্ঞ পর্যালোচনায় এর মধ্যে ১৭৯ জনের ডেঙ্গিজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন যুগান্তরকে বলেন, এখন বর্ষা মৌসুম, তাই এডিসবাহিত ডেঙ্গি রোগী বাড়ছে। তবে ডেঙ্গি ধরা পড়লেই হাসপাতালে আসার প্রয়োজন নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাসায় বসে চিকিৎসা নিতে পারবেন। তবে যাদের শরীরে জটিলতা দেখা দেবে তারাই হাসপাতালে আসবেন। অর্থাৎ যাদের রক্তক্ষরণ বা তীব্র পেটে ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা যায় তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন।

এক্ষেত্রে অবশ্যই নন-কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ন্যাশনাল গাইডলাইন ফলো করতে হবে। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ফ্লুইড সরবরাহ করা হয়েছে, যাতে কোনো সংকট দেখা না দেয়।

রামেকে প্রথম ডেঙ্গি রোগী, খুমেকে ৩ রোগী ভর্তি : রাজশাহী ও খুলনা ব্যুরো জানায়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) এ বছরের প্রথম ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হয়েছে। সোমবার বিকালে হেলাড়ি স্বপন কর্মকার (২৩) নামের এক রোগী ভর্তি হন। স্বপনের বাড়ি মহানগরীর ডিঙ্গাডোবা বাগানপাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম মনি রানা কর্মকার। এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালেও তিনজন ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হয়েছেন। করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর আক্রমণ স্বাস্থ্য বিভাগকে ভাবিয়ে তুলেছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, স্বপন ঢাকার নর্দার্ন ইন্টারন্যাশনাল নার্সিং কলেজের ছাত্র। তিনি ঢাকাতেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। এরপর তিনি রাজশাহীতে চলে আসেন।

পরিচালক বলেন, এ মুহূর্তে স্বপনকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বুধবার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডকে ডেঙ্গি ওয়ার্ড করা হবে। তখন সেখানে তাকে স্থানান্তর করা হবে। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, আমরা শুনেছি রামেক হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সোমবার তিনজন ডেঙ্গি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরা সবাই খুলনার বাইরের। এরা হলেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার দেলোয়ারের ছেলে সজীব (৩২)। রামপাল উপজেলার বাঁশতলি এলাকার অপু বিশ্বাসের ছেলে অতিস (৪) ও নড়াইল লোগাগড়ার লুটিয়া এলাকার কানু ঘোষের ছেলে লিংকন ঘোষ (১০)। তারা সোমবার ভর্তি হয়েছেন।

খুলনা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, খুলনায় এখনও কোনো ডেঙ্গি রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গি টেস্টও করা হচ্ছে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930